. #শুভ_বিশ্ব_আদিবাসী_দিবস”গাছ লাগান প্রাণ বাঁচান”স্লোগানটা শুধুমাত্র পোষ্টার লাগানোই রয়ে গেল ; আমরা হয়তো গাছ লাগানোর চেয়ে পোষ্টারই লাগিয়ে ফেলেছি বেশি।কেটেছি নির্বিচারে গাছ,আমাদের পরম বন্ধু আমাদের পিতা যিনি আমাদের খাবার,দিয়ে,জল দিয়ে, ওষুধ দিয়ে,বাড়িদিয়ে,পোষাক দিয়ে লালন করলেন তাঁদের কাছে আমাদের পিতৃঋণ অস্বীকার করলাম কাটলাম তাদের ধ্বংস করলাম।নগর গড়লাম ,কারখানা গড়লাম দুশো তিনশো বছরের বৃক্ষ পিতামহকে ছেদন করলাম। প্রকৃতিও তার ভারসাম্য রক্ষা করা জন্য ব্যবস্থা করেনিলেন মহামারি দিয়ে।হয়তো এর ফল আগামীতে আরো কঠোর রূপে আসতে চলেছে।নিজ কর্ম ফলে হারিইলাম এ লঙ্কা পুরি।এবার আসি আসল বিষয়ে দীর্ঘ দিন জঙ্গলমহলের আদিবাসী পরগানায় যাতায়াত ও থাকার ফলে সাঁওতাল সহ বিভিন্ন উপজাতি সম্প্রদায়ের সাথে একটা গভীর যোগসূত্র তৈরি হয় সে তাদের বাড়িতে থাকার মেঠো গন্ধ হোক বা পিঁপড়ের ডিমের চাটনি সহযোগে ভাত খাওয়া হোক,মাটির কাছে থাকার মাটির গন্ধ মাখার এক বিস্তৃত সুযোগ হয়েযায়। বস্তুত যার আশির্বাদ স্বরূপ পেয়েছি জঙ্গল মহলের সেই সব আদিবাসী ও সমাজের বিভিন্ন পরপ বা উৎসব কে।বাহা বঙ্গা, স্থান ভেদে শারুল , হয় মাহ্ মরে, প্রভৃতি পরব।সেই পরবে উপস্থিত থেকে খুব কাছ থেকে দেখেছি এই পূজোর প্রধান উৎস হল বৃক্ষ অর্থাৎ গাছকে পূজো করা।গাছকে রক্ষা করা।সারাদিন শালগাছের নীচে, গাছকে পুজোকরা হয় বিভিন্ন উপাচারে নৈবেদ্য সাজিয়ে শালগাছের ফুল পাতা প্রভৃতিদিয়ে-হেসাঃ মা চটেরেজানিনা গঁসায় তুদেদয় রাগেকানবাড়ে মা লাড়েরেজা গঁসায় গোৎরোৎ জয় শাহেদা।সারাদিন পূজোর পর সন্ধ্যা থেকে সাররাত ধামসা মাদল নিয়ে মহুয়া মদ খেয়ে চলে নাচ গান,বাহা শব্দের অর্থ ফুল এই উৎসবটা মূলত ফাল্গুন চৈত্র এ মাসে হয়ে থাকে।সাঁততাল জনজাতির মূল জীবিকা হল শালপাতা তোলা এবং থালা বানানো ও কাঠ সংগ্রহ।এই বাহা উৎসবে শালফুলে পূজো করার পর ই তারা গাছে হাত দেবার অনুমতি।সারা ডুঙরি জুড়ে বাড়িতে বাড়িতে় স্বজন আসে উৎসব এর আবহ গড়েওঠে।সব চেয়ে প্রাচীন শালগাছটিকে পূজোর পর ওই এলাকাটি চিহিৃত করা হয় এবং ওই এলাকার গাছ পরম্পরা গত ভাবে কেউ কাটতে পারবেনা।এভাবে এক একটি জঙ্গল রক্ষা করা হয়।একই ভাবে মাটিকেও পুজো করা হয় যা আমাদের ফসল দেয় খাদ্য দেয়। এবং চোরা শিকারিদের হাত থেকে জঙ্গলকে বাঁচাতে বনরক্ষা বাহিনী তৈরি করেছে তারা নিজ উদ্যোগে পাহারা দেয় বন।যদিও সরকারি উদ্যোগে এখন প্রচুর গাছ কাটা হয় কারণ ছাড়াই। গ্রামের মানুষের সাথে লড়াই শুরু হয়।প্রকৃতপক্ষে একটা গোটা জনজাতি নির্লিপ্ত ভাবে শতাব্দী ধরে পরিবেশ রক্ষা দায় একাকাঁধে নিয়ে বেরাচ্ছে।আমার শহরে আধুনিক মানুষ যারা সভ্য ও শিক্ষিত বলে নিজেদের দাবী করি তারা জঙ্গল কেটে ফ্ল্যাট বানিয়ে পরিবেশ নষ্ট করছি।তথচ এই কাছে এগিয়ে আসার ভূমিকা অনেক আগেই তাদের নিতে হতো।শিক্ষা ও সচেতনতার যে পুঁথি গত বিদ্যার কাছে হারিয়ে যায় ওই আদিবাসী মানুষ গুলোর প্রকৃতি থেকে পাওয়া শিক্ষা,মাটির মূল্যবোধের কাছে বারবার পরাজিত হয় মেকি রঙ করা সভ্যতার পোশাক। যশোর রোডের দুপাশে বহু শতাব্দী প্রাচীন শিরীষ গাছ গুলো কেও আমরা রেয়াত করিনি।অথচ এই ভূখন্ডের আদি বাসিন্দা যারা তারাই থাকলো ‌জঙ্গলকে বুকে‌ করে। কোনো মূর্তিকে পুজো করে নয়,গাছকে‌ ঈশ্বর রূপে পূজো করে গাছ না কেটে। পরিবেশের বন্ধু হয়ে।ওরাই প্রকৃত শিক্ষিত।আজ ওদের কথা বলতে বড় ইচ্ছে হলো,যারা রোজই থাকে, হোকনা একটা দিন তাদের জন্য। ওদের জন্য বলতে ইচ্ছে করছে আজ–“হে স্মৃতি বৃক্ষ আমাদের ক্ষমা করো।আমাদের পিতৃঋণের দায়ভার বহন করতে আমরা অক্ষম।মানুষের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।চেতনার রঙে রেঙে উঠুক পান্না সবুজ মন!আমার বলতে ভাললাগে এই সব সভ্য অথাকথিত শিক্ষিত মানুষদের-তুমি যতটা আধুনিকতার স্রোত হাঁটবে-আমি ঠিক ততটাই নিজস্বতায় প্রাচীন পন্থী হবো”!—– ✍️ #মলয়_পাল 🙏জোহার 🙏৯ই আগস্ট শুভ বিশ্ব আদিবাসী দিবসের শুভেচ্ছা সবাইকে।

Published by moon DJ studio

https://wbsfda.org/

Leave a comment

Design a site like this with WordPress.com
Get started