মাছে ভাতে বাঙালি। আজ মানসাই পাড়ের গল্পের সাময়িক বিরতি। চলতে থাকবে সেটা, এখনো সমস্ত চরিত্র গুলোর সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে উঠতে পারিনি। গ্রামে জন্ম এবং গ্রামে বড় হওয়ার সুবাদে আমার ছবির সবচেয়ে প্রিয় ও ভালো লাগার বিষয় মূলত গ্রামকেন্দ্রিক।আমার ইউটিউব চ্যানেল Ami Bhabaghure তে গেলে দেখবেন আমি নর্থইস্ট এর বিভিন্ন জায়গায় ছবি তুলতে যাই এবং আমার নাইনটি ফাইভ পার্সেন্ট ছবি হচ্ছে গ্রামকেন্দ্রিক গ্রামের মানুষ তাদের উৎসব তাদের আনন্দ এটাই আমার ভালো লাগার বিষয় । এবং সেই অর্থে মানসাই হচ্ছে আমার ছোটবেলার সঙ্গী আমি বড় হয়েছি আমার জন্ম কর্ম্ম সবকিছু মানসাইকে কেন্দ্র করে সুতরাং মানসাইয়ের সঙ্গে সাথে যারা যুক্ত সেই মানুষগুলোই আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ হবেন, এবং মানসাই আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা হবে এটাই স্বাভাবিক যাইহোক আজকে সাময়িক বিরতি। তার কারণ হচ্ছে আমরা যেগুলো ফেসবুক পেজে পোস্ট করি সেগুলোর বর্ষপূর্তিতে ফেসবুক সেই পোস্টগুলা রেকমেন্ড করে। গতবছর পুরো লকডাউন এর সময় এমনই একটা পোস্ট করেছিলাম আমার কাজের জায়গা যাওয়ার পথে সেটা জায়গাটার নাম হচ্ছে পানিগ্রাম মানসাই থেকে কিছুটা দূরে পানিগ্রাম বলে একটি গ্রাম আছে সেই গ্রামের কৃষকদের মাছ ধরার ছবি।এমনিতেই মাছের জন্য পাগল, আবার যদি শিকারের মাছ হয় তাহলেতো কথাই নেইএই শ্রাবন ভাদ্রে রোদ উঠলে নদী নালার জল দ্রুত শুকতে থাকলে , গ্রাম বাংলা সহ পুরো উত্তর পূর্ব ভারতে বিভিন্ন অঞ্চলে বুড়ো-বুড়ি, ছুঁরো-ছুরি খালে বিলে, হাওড়ে, জমিতে মাছ মারতে নেমে পরে। এমনকি অসম সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলে কিছু যায়গায় বছরে একটি পূর্ব নির্ধারিত বিশেষ দিনেতো মাছধরার উৎসব অবধি হয় পথে যেতে যেতে এইরকমই একটা দৃশ্য। কাল দেখেছিলাম সপ্তডিঙ্গা সাজিয়ে টেনে নিতে। প্রথমে বুঝতেই পারি নি ওটা ছিলো মাছ ধরার এখটা কৌশল। ভেবেছিলাম গ্রামের ছোট বাচ্ছারা যেমন কলার ঢোঙ্গল দিয়ে নৌকা বানিয়ে বৃষ্টির জলে টেনে নিয়ে যায় ওরমি কিছু হতে পারে, হঠাৎ মনে হলো ঐ বয়স্ক লোকগুলো নৌকা নৌকা খেলবে ক্যানো। একজনকে জিজ্ঞেস করে পরে সেটার রহস্য উৎঘাটন হয়। কলার ঢোঙ্গলের নৌকা, অনেক কয়টা লম্বা নৌকার মতো বানিয়ে একসাথে বেঁধে টানলে অল্প জলের মাছ লাফ দিয়ে ওগুলোতে ওঠে। ছিপ, খরা, ঝাঁকি জাল, টানা জাল, টেপি জাল, ফাঁস জাল, কেকড়ি, পলো, ট্যাপাই, কুচ এসব তো আছেই তারপর ওগুলো ইনোভেশন।এবার লকডাউনের জন্য এমনিতেই হাটে বাজারের কাজকর্ম কম। যারা বিদেশে থাকতেন বাড়ি চলে এসেছেন। এবার মাছ মারার হিড়িটা একটু বেশিই যেন।নিচের বিষয়টা বেশ আকর্ষণীয় মনে হল।ছবির দুজন কেরালাতে থাকতেন এবার লকডাউনে বাড়ি চলে এসেছেন সাথে এই স্পোর্টস আমব্রেলা, ডাঁটি ছাড়া ছাতাটা এনেছেন, এটা এখন দেদারসে কাজে লাগছে এই প্রখর রৌদ্রে দাঁড়িয়ে কোস্টা ক্যালাইতে, রোঁয়া গাইড়তে বা এইভাবে জমির জল ছেকিয়া মাছ ধইত্তে।