পশ্চিমবঙ্গের উত্তর পূর্ব সীমান্তে ডুয়ার্সের একটি ছোট্ট গ্রাম হাসিমারা। গ্রাম ছোট হলে কি হবে রেল স্টেশনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দুটিপ্রথমত, এখানে এয়ারফোর্সের একটি বেস আছে, তাই তাদের রসদ নিয়ে আসে পেল্লাই সব মালগাড়ির দল। দ্বিতীয়ত, ভারত ভুটান সীমান্তবর্তী শহর জয়গাঁও এর সবচেয়ে কাছের রেল স্টেশন এই হাসিমারা। তাই এখানে প্যাসেঞ্জার ট্রেনের সঙ্গে এক্সপ্রেস ট্রেনেরও স্টপেজ আছে। অবশ্য এই লাইনটাতে সারাদিনে কটি মাত্র প্যাসেঞ্জার ট্রেন ও কটি এক্সপ্রেস ট্রেন যায়। তাই ওই ট্রেন আসার সময় বাদ দিলে প্ল্যাটফর্মে তেমন জনসমাগম হয় না। বেশ নিরিবিলি থাকে। তবে অন্যদিকে যেখানে মালগাড়ির শান্টিং ইয়ার্ড সেদিকটা বেশ ব্যস্ত। সারাদিন ধরে মালগাড়ির লোডিং আর আনলোডিং চলতেই থাকে। আসে বিমানসেনার রসদ, আসে ভুটানে পাঠানোর জন্য বস্তা ভর্তি বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, আবার এখান থেকে মালগাড়ি বোঝাই হয়ে যায় বিভিন্ন বাগানের চা, বিভিন্ন গন্তব্যে প্ল্যাটফর্ম থেকে রেললাইন ধরে মাদারিহাটের দিকে একটু এগিয়ে গেলেই দেখা যায় ডানদিকে চায়ের বাগান আর বাঁদিকে রেল লাইনের লাগোয়া মানুষের বসবাসের ছোট ছোট ঝুপড়ি। জীবনধারণের জন্য নানা জায়গা থেকে মানুষ এসেছেন এখানে। ঝুপড়ি পের হলেই একটি সরু পিচের রাস্তা। এখানে রেলের বাবুদের কোয়ার্টার সারি সারি। ছোট ছোট কোয়ার্টার আর বাউণ্ডারির মধ্যে ছোট ছোট বাগান। বেশ শান্ত জায়গাখানি। কোয়ার্টারের ওপাশেই বাংলার সঙ্গে আসামের যোগাযোগ রক্ষাকারী জাতীয় সড়ক। স্টেশন বা আশেপাশের কোনো জায়গা থেকে উত্তরে চাইলেই দেখতে পাওয়া যায় নীল আকাশের প্রেক্ষাপটে সবুজাভ ধূসর হিমালয়ের রেখা। এইসব দেখতে দেখতে কখন যে বেলা কেটে যায় বোঝাই যায় না। সূর্য পশ্চিমে ঢলতে শুরু করলে পাখিদের ডাকে চমক ভেঙে বুঝতে পারা যায় বেলা পড়ে এল। গোধূলি আসন্নপ্রায়/