রানি মুদির গলির গপ্পো💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐💐‘রানি মুদিনীর গলি, সরাপের দোকান খালি/যত চাও তত পাবে, পয়সা নেবে না।’ নাট্যাচার্য গিরিশচন্দ্র ঘোষের বিখ্যাত ‘প্রফুল্ল’ নাটকে মদ্যপদের মুখে শোনা যেত এই গান। আসলে এভাবেই ইতিহাস লুকিয়ে থাকে বিভিন্ন গানে-গল্পে। ঠিক যেমন এই গানে লুকিয়ে শহর কলকাতার একটি প্রাচীনতম রাস্তার আখ্যান—রানি মুদির গলি। রাজভবনের অদূরে গ্রেট ইস্টার্ন হোটেলের ঠিক পাশ দিয়ে গিয়েছে এই রাস্তা। সিরাজউদৌল্লার কলকাতা অবরোধের সময় এখানেই তুমুল সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল নবাব ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনারা। যদিও এই গলির পরিচয় নিয়ে খানিক মতভেদ আছে। অনেক ইতিহাস গবেষক মনে করেন এই রাস্তার নাম ছিল রানা মোদ্দা লেন। এমনকী একটি মানচিত্রেও সেই নাম দেখা যায়। আবার কেউ কেউ বলেন, পথটির নাম ছিল রণমত্ত বা রানামত্তা গলি। সেই রাস্তাতেই দোকান ছিল রানি মুদির। তিনি দোকানদারির সঙ্গে মদের ঠেকও চালাতেন। তাই অচিরেই তাঁর নামে গলিটি তুমুল পরিচিতি লাভ করে।ব্রিটিশ আমলেই ১৮ নম্বর রানি মুদিনীর গলিতে গড়ে ওঠে বাঙালি জমিদারদের প্রথম সংগঠন ‘ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’। সালটা ১৮৫১। মূলত কালা আইনের বিরোধিতা করেই স্থাপিত এই জমিদার-সভা। ইংরেজ সরকারের অন্যায়-অত্যাচারের সমালোচনা, প্রতিবাদ এবং দেশীয় জমিদার ও সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষাই ছিল আসল উদ্দেশ্য। এই বিখ্যাত সংগঠনটির অবস্থানের কারণে গুরুত্ব হারান সামান্য দোকানদার রানি মুদি। পথটির পরিচয় বদলে হয়ে যায় ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান স্ট্রিট। সেই নামও অবশ্য আর নেই। এখন প্রয়াত বীর সৈনিকের স্মৃতিতে এই রাস্তার নতুন নামকরণ হয়েছে আব্দুল হামিদ সরণি। অথচ আজও ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় ১৮৫১ সালে গ্রেট ইস্টার্ন হোটেলের ঠিকানা—রানি মুদিনীর গলি।